সোনার দাম ছুঁয়েছে সর্বোচ্চ, কেন এই উর্ধ্বগতি?

দেশে আবারও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে সোনার দাম। সোমবার দেশের স্বর্ণ বাজারে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১,১৭,৫০০ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে টানাপোড়েন ও মুদ্রার মান হ্রাসের কারণে এই উর্ধ্বগতি।

বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধি:
গত কয়েক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৪৫০ মার্কিন ডলার, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, এবং মার্কিন অর্থনীতির দুর্বলতা এই বাড়তির পেছনে মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রভাব:
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার মান হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে আমদানিকৃত স্বর্ণের দাম বেড়েছে। এছাড়াও, দেশের ভোক্তা পর্যায়ে চাহিদা কিছুটা বেশি থাকায় মূল্যবৃদ্ধির গতি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন,
“আমাদের হাতে বিকল্প নেই। বিশ্ববাজারে প্রতিদিন যে হারে দাম বাড়ছে, আমরা সেই অনুযায়ী সামঞ্জস্য আনছি।”

গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া:
এই দাম বৃদ্ধিতে ভোক্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বিয়ে বা উপহার দেওয়ার জন্য সোনা কেনা স্থগিত রাখছেন।

“আগে যেটা এক ভরির বাজেট ছিল, এখন সেটা এক জোড়া কানের দুলেও আসছে না।” — বললেন গুলশানের স্বর্ণের দোকানে আসা একজন ক্রেতা।

বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি:
বিশ্লেষকরা বলছেন, সোনাকে “নিরাপদ বিনিয়োগ” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে মানুষ সাধারণত সোনায় বিনিয়োগে আগ্রহী হয়, যার ফলে দাম বৃদ্ধি পায়।

অর্থনীতিবিদ ড. হাফিজুর রহমান বলেন,
“যতদিন না বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে, ততদিন সোনার দাম স্বাভাবিক হবে না।”

💰 সংক্ষেপে:
✅ ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনা: ১,১৭,৫০০ টাকা
✅ আন্তর্জাতিক মূল্য: ২,৪৫০ মার্কিন ডলার (প্রতি আউন্স)
✅ মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈশ্বিক অস্থিরতা দায়ী
✅ গ্রাহকদের চাপ ও বাজারে অস্থিরতা